ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যায় আইসিটি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ওসি মোয়াজ্জেমকে সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে শাহবাগ থানা পুলিশ সোনাগাজী থানার তিনজন পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে।
সূত্র জানিয়েছে, আজ দুপুর নাগাদ ওসি মোয়াজ্জেমকে আদালতে তোলা হবে। তবে বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে তাকে নিয়ে আদালতের দিকে রওয়ানা দেবেন সোনাগাজী থানা পুলিশ।
এদিন বিকেলেই ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মারুফ হোসেন সরদার জানান, যেহেতু ওসি মোয়াজ্জেমের নামে সোনাগাজী থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, তাই ওই থানার পুলিশের হাতেই তাকে হস্তান্তর করা হবে।
তাকে কোন আদালতে নেওয়া হবে জানতে চাইলে মারুফ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু ওয়ারেন্টটা তাদের (সোনাগাজী থানা) কাছে, কাজেই তারাই সিদ্ধান্ত নেবে যে কোন আদালতে হাজির করা হবে।’
আগুনে পুড়িয়ে হত্যার শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি করেছিলেন ব্যারিস্টার সাইয়্যেদুল হক সুমন।
গত ৬ এপ্রিল এইচএসসি সমমানের আলিম আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা নুসরাত জাহান রাফিকে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল নুসরাত মারা যান।
এর কিছুদিন আগে নুসরাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওইদিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এরপর থেকে পলাতক ছিলেন মোয়াজ্জেম। তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছিল না পুলিশের, এমনকি তিনি আত্মসমর্পণও করেননি।
পরে গত ৮ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তিনি রংপুর রেঞ্জ অফিসে যোগ দেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তিনি সেখান থেকে নিরুদ্দেশ হন।